আজ ১৫ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ হানাদারমুক্ত দিবস
- আপডেট সময় : ১০:০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ৮৯ বার পড়া হয়েছে

ফজল কাদির: ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরগঞ্জে পাকিস্তানি সেনারা শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তুলেছিল। তাদের ঘাঁটিতে আঘাত হানতে ১৪ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সাতটি কোম্পানী তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে তিন দিক থেকে আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে পাক সেনারা পালিয়ে যেতে শুরু করে। তারা সৈয়দপুর সেনানিবাস ও রংপুর সেনানিবাসে আশ্রয় নেয়। ফলে ১৫ ডিসেম্বর নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান চৌধুরী জানান- পাকসেনারা কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে আর অদূরে থাকা কিশোরীগঞ্জ হাইস্কুলের লেচুগাছ সংলগ্ন বিল্ডিংয়ে পাকসেনারা অবস্থান করছিল। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তারা ক্যাম্প গড়ে তুলেছিল। সেখান থেকে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করত।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়-পাকিস্তানি আর্মি ডোমার, ডিমলা বিভিন্ন এলাকা থেকে পিছু হটে কিশোরগঞ্জে শক্তিশালী অবস্থান নেয়। কিশোরগঞ্জে পাকিস্তানি সেনাদের সুবিধা ছিল, নিকটে রংপুর ও সৈয়দপুর সেনানিবাস। এখান থেকে তারা প্রয়োজনীয় সাহস ও শক্তি পাচ্ছিল। এছাড়া সৈয়দপুর সেনানিবাস ও রংপুর সেনানিবাসের সাথে সরাসরি যোগাযোগ থাকার কারণে তারা কিশোরগঞ্জে শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তোলে। ১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল ক্যাপ্টেন ইকবালের নেতৃত্বে কিশোরগঞ্জে প্রবেশ করে। ১২ ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন ছাতোয়ানের নেতৃত্বে ভারতীয় বাহিনী কিশোরগঞ্জে আসে। মুক্তিযোদ্ধারা সাতটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পাকিস্থানী সেনাদের তাড়া করতে করতে রংপুর ও সৈয়দপুর অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকে। এলএমজি, ৩ ইঞ্চি মর্টার ও অন্যান্য আধুনিক অস্ত্রের সাহায্যে কিশোরগঞ্জে শক্রুর ওপর আক্রমণ করে। পিছনে ভারী অস্ত্রে সজ্জ্বিত ছিল মিত্রবাহিনী। মুক্তিবাহিনীরা প্রচন্ড আক্রমণ চালায়। তুমুল যুদ্ধ হয়। মুক্তিবাহিনীর মর্টারসেলের মুখে কিশোরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে অবস্থানরত খান সেনাদের ভারি অস্ত্রভান্ডার গুড়িয়ে যায় । ধাইজান নদীর ধারে দুটি ব্যাংকারে অবস্থানরত খান সেনাদের ব্যাংকার দু’টি কৌশলে মুক্তিযোদ্ধারা ধ্বংস করে । মুক্তিযোদ্ধারা আধুনিক অস্ত্রে তিন দিক থেকে আক্রমণ রচনা করলে মধ্যরাতে পাকিস্তানি বাহিনী সৈন্যরা সৈয়দপুর ও রংপুর সেনানিবাসে আশ্রয় নেয়। কিশোরগঞ্জ যুদ্ধে ৭ জন পাক সেনা নিহত হয়। তাদের মরদেহ কিশারগঞ্জ হাইস্কুল সংলগ্ন তৎকালীন দরগারপাড়ে সমাহিত করা হয়। এসময় মুক্তিবাহিনীর তেমন ক্ষতি হয়নি। হানাদারমুক্ত হলে আনন্দ মিছিল নিয়ে কিশোরগঞ্জে সাধারণ মানুষের ঢল নামে। ১৫ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়।







.gif)






