সৈয়দপুর ০২:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধস্ত

দগ্ধ শরীরে শিশুদের বাঁচানোর চেষ্টা, সেই শিক্ষিকার প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত

মারুফ হোসেন লিয়ন
  • আপডেট সময় : ০৭:০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫ ১৫৩ বার পড়া হয়েছে
চোখ২৪.নেট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মো. মারুফ হোসেন লিয়ন: রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। ঘটনাস্থলে স্কুলের কো-অর্ডিনেটর মাহরিন চৌধুরী (৪২) দগ্ধ হন। দগ্ধ শরীর নিয়েই শিশুদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন। শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে শতভাগ দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর কাছে হার মেনেছেন এই সাহসী শিক্ষক।

গতকাল রাত ১০ টার দিকে মাহরিন চৌধুরীর ভাই মুনাফ মুজিব চৌধুরী এক ফেসবুক পোস্টে বোনের মৃত্যুর সংবাদ জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “মাহেরিন আপু আর আমাদের মাঝে নেই।”

জানা গেছে সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের ওপর বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। ওই সময় স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীদের হাত ধরে গেট পার করানো ছিল মাহেরিন চৌধুরীর নিত্যদিনের দায়িত্ব।

আগুনের ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়লেও দায়িত্বে অটল ছিলেন মাহরিন। নিজে বেরিয়ে যাওয়ার আগে যতজন শিক্ষার্থীকে সম্ভব বের করে আনার চেষ্টা চালিয়ে যান। এ সময় তার শরীরে আগুন ধরে যায়।

মুনাফ মুজিব চৌধুরী লিখেছেন, “মাইলস্টোনে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করতেন। বিল্ডিংয়ে আগুন লাগার পর প্রথমে বের হয়ে আসেননি, বরং যতজন শিক্ষার্থীকে সম্ভব বের করে আনার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ১০০ শতাংশ দগ্ধ হন।

মুনাফ চৌধুরী লিখেছেন, “আমার বড় বোন, যিনি আমাকে মায়ের মতো করে বড় করেছেন। আজ আপনারা দয়া করে আমার প্রিয় আপুর জন্য দোয়া করবেন। তিনি তার দুই ছেলেকে রেখে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।

আজ ভোরে আরেকটি ফেসবুক পোস্ট মাহরিন চৌধুরীর ভাই মুনাফ চৌধুরী লিখেছেন “মাহেরিন আপুর (মাহেরিন চৌধুরী) প্রথম নামাজে জানাজা আজ (২২ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের গজল আজম জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি আরো লিখেছেন, “ইনশাআল্লাহ, আমরা তাকে নীলফামারীর জলঢাকার আমাদের গ্রামে (বগুলাগাড়ি) নিয়ে যাব, তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা হবে এবং আমাদের পারিবারিক কবরস্থানে আমাদের বাবা-মায়ের পাশে দাফন করা হবে। দুর্ভাগ্যবশত এই পরিস্থিতিতে আমরা ঢাকায় তার জানাজার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছি না। যদি পারেন, তাহলে দয়া করে যোগ দিন অথবা আমার বোনের জন্য দোয়া করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য


উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধস্ত

দগ্ধ শরীরে শিশুদের বাঁচানোর চেষ্টা, সেই শিক্ষিকার প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় : ০৭:০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

মো. মারুফ হোসেন লিয়ন: রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। ঘটনাস্থলে স্কুলের কো-অর্ডিনেটর মাহরিন চৌধুরী (৪২) দগ্ধ হন। দগ্ধ শরীর নিয়েই শিশুদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন। শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে শতভাগ দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর কাছে হার মেনেছেন এই সাহসী শিক্ষক।

গতকাল রাত ১০ টার দিকে মাহরিন চৌধুরীর ভাই মুনাফ মুজিব চৌধুরী এক ফেসবুক পোস্টে বোনের মৃত্যুর সংবাদ জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “মাহেরিন আপু আর আমাদের মাঝে নেই।”

জানা গেছে সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের ওপর বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। ওই সময় স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীদের হাত ধরে গেট পার করানো ছিল মাহেরিন চৌধুরীর নিত্যদিনের দায়িত্ব।

আগুনের ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়লেও দায়িত্বে অটল ছিলেন মাহরিন। নিজে বেরিয়ে যাওয়ার আগে যতজন শিক্ষার্থীকে সম্ভব বের করে আনার চেষ্টা চালিয়ে যান। এ সময় তার শরীরে আগুন ধরে যায়।

মুনাফ মুজিব চৌধুরী লিখেছেন, “মাইলস্টোনে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করতেন। বিল্ডিংয়ে আগুন লাগার পর প্রথমে বের হয়ে আসেননি, বরং যতজন শিক্ষার্থীকে সম্ভব বের করে আনার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ১০০ শতাংশ দগ্ধ হন।

মুনাফ চৌধুরী লিখেছেন, “আমার বড় বোন, যিনি আমাকে মায়ের মতো করে বড় করেছেন। আজ আপনারা দয়া করে আমার প্রিয় আপুর জন্য দোয়া করবেন। তিনি তার দুই ছেলেকে রেখে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।

আজ ভোরে আরেকটি ফেসবুক পোস্ট মাহরিন চৌধুরীর ভাই মুনাফ চৌধুরী লিখেছেন “মাহেরিন আপুর (মাহেরিন চৌধুরী) প্রথম নামাজে জানাজা আজ (২২ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের গজল আজম জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি আরো লিখেছেন, “ইনশাআল্লাহ, আমরা তাকে নীলফামারীর জলঢাকার আমাদের গ্রামে (বগুলাগাড়ি) নিয়ে যাব, তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা হবে এবং আমাদের পারিবারিক কবরস্থানে আমাদের বাবা-মায়ের পাশে দাফন করা হবে। দুর্ভাগ্যবশত এই পরিস্থিতিতে আমরা ঢাকায় তার জানাজার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছি না। যদি পারেন, তাহলে দয়া করে যোগ দিন অথবা আমার বোনের জন্য দোয়া করুন।