যুদ্ধাপরাধীরা যাতে আর ক্ষমতায় ফিরতে না পারে: প্রধানমন্ত্রী

- আপডেট সময় : ০২:৩৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মে ২০২৩ ৭৮ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট: দেশের স্বাধীনতা বিরোধী, খুনি ও অগ্নি সন্ত্রাসীরা যেন আর ক্ষমতায় ফিরতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (০৩ মে) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে রিজ কার্লটন হোটেলের হলরুমে বাংলাদেশি প্রবাসীদের দেয়া নাগরিক সংবর্ধনায় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, খুনি, স্বাধীনতা বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীরা যাতে আর ক্ষমতায় ফিরতে না পারে তা নিশ্চিত করুন। বিএনপি-জামায়াত জোট বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ২০১৩ থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত তথাকথিত আন্দোলনের শতশত নিরীহ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে।
তিনি দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, এ চক্র দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৪ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে একে আবারও উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।
ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাগুলোকে সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়ে দেশে-বিদেশে রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার চালানোর জন্যে বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। বিএনপি-জামায়াত জোট ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা গ্রহন করে আমাদেরই বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। তাদের অপপ্রচার কানে নেবেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। সবাইকে মাথা উঁচু করে ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে বিশ্বে চলতে হবে। বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার অবকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ প্রতিটি খাতের উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
আওয়ামী লীগ একটি গণমুখী দল এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এটি গঠিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময়ই জনগণের কল্যাণে কাজ করে। দল যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়; তখনই দেশের উন্নয়ন হয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। একে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে এ সরকার বদ্ধপরিকর।
দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নে প্রবাসীরা অনেক অবদান রেখেছে। তিনি দেশবাসীকে হুন্ডির পরিবর্তে বৈধ মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান। সরকার যথাযথ প্রক্রিয়ায় রেম্যিটান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের পরও সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা সম্ভব হয়েছে। চলমান যুদ্ধের কারণে উন্নত অনেক দেশ সংকটে থাকলেও আমরা অনেক ভালো আছি।
প্রধানমন্ত্রী খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, দেশ যেন কোন সংকটে না পড়ে। দেশে দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশ এবং অতি দরিদ্রের হার ৫.৬ শতাংশে নামার কথা উল্লেখ করেন।।
তিনি আরও বলেন, সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাংক অনুসরণ করে সারাদেশে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে বাড়ি দিচ্ছে। এরই মধ্যে আবাসন প্রকল্পের আওতায় ৩৫ লাখ লোককে বাড়ি দেয়া হয়েছে এবং তাদের জীবিকা নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না, কারণ প্রতিটি গৃহহীন লোককে বিনামূল্যে আবাসন প্রকল্পের আওতায় আনতে তার সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান এর পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এসময় উপস্থিত ছিলেন।