নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বড়ভিটা স্কুল এন্ড কলেজের কথিত অধ্যক্ষ মহির উদ্দিন বসুনিয়ার অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ এনে কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমি হককে লিখিত অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানের অন্য সকল শিক্ষকেরা। গেল পহেলা সেপ্টেম্বর ২০২৪খ্রিঃ উক্ত কথিত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন তারা।
উক্ত অভিযোগে ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠান প্রধান হামিদুল হকের কাছ থেকে তৎকালীন ইউএনও অফিসে মোটা টাকা ঘুষের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠানে কাউকে না জানিয়ে এই কথিত অধ্যক্ষ মহির উদ্দিন বসুনিয়া প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব নিলে পরবর্তীতে ২০০৮ সালে তৎকালীন কাজী ফারুক কাদের এমপি নির্বাচিত হলে এই কথিত অধ্যক্ষ মহির উদ্দিন বসুনিয়াকে প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে কিশোরী মোহন রায়কে ভারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্বভার অর্পন করা হয়।এদিকে এই ভারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান প্রধান কিশোরী মোহন রায় দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করলে অত্র প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক মনোদাস রায়কে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের গুরুদায়িত্ব অর্পণ করা হয়।অন্যদিকে এই দুই বাবুর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে মহির উদ্দিন বসুনিয়া আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা হিসাবে বহিঃপ্রকাশ ঘটান।এতে করে দলীয় ক্ষমতাকে পুঁজি করে তিনি শ্রেনী পাঠদান থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানের আগমন প্রস্থান কোন কিছুর নিয়মকে তোয়াক্কা করেননী মর্মেও অভিযোগ করা হয়।
উক্ত অভিযোগ আরো উল্লেখ্য যে,এবারে কথিত এই অধ্যক্ষ দ্বিতীয় মেয়াদে দলীয় এমপি হিসাবে গোলাম মোস্তফা নির্বাচিত হলে ক্ষমতার দাপটে তৎকালীন প্রতিষ্ঠান প্রধান মনোদাস রায়কে মারধরের ভয়ভীতি দেখিয়ে মহির উদ্দিন বসুনিয়া তার ভাই আব্দুল হামিদ মাষ্টার কে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচিত করে প্রথম কার্যদিবসে মনোদাস রায়ের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদটি ছিনিয়ে নেন। এভাবেই আজ তিনি স্কুল শাখার সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের শাখা শিক্ষক থেকে আজ কথিত অধ্যক্ষ হিসেবে নিজেকে কর্মরত রেখেছেন উক্ত প্রতিষ্ঠানে।
স্কুলে গেলে জানা যায় এই কথিত প্রতিষ্ঠান প্রধান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত থাকলেও আওয়ামী লীগে সরকারের দাপটে দীর্ঘ ১৬ বছরে তিনি তার সিল মোহরে অধ্যক্ষ লিখে আসতেছেন যা কখনই গ্রহন যোগ্য নহে।এতেই শেষ নয় এই মহির উদ্দিন বসুনিয়ার দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামী লীগ সরকার থাকা কালীন এই প্রতিষ্ঠান জুরে রয়েছে বড় মাপের নীল নকশার ছক যা এই অভিযোগে তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানের অন্য সকল শিক্ষকেরা।
অভিযোগ আরও বলা হয়েছে,এনটিআরসিএ নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক /শিক্ষিকাদের ৫জনের নিকট থেকে তিনি ২০১৯ সালে ঘুষ দাবি করেন নিয়োগ, যোগদান কিংবা এমপিওভুক্তি করনের জন্য।কলেজ শাখাকে এমপিওভুক্তি করনের জন্য কলেজ শাখার শিক্ষকদের কাছ থেকে দফায় দফায় তিনি মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মর্মেও অভিযোগ করা হয়েছে উক্ত অভিযোগে।প্রধান মন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট হতে প্রাপ্ত অর্থ আত্মসাৎ এতে করে শিক্ষার্থীদের রোষানলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, শিক্ষক /শিক্ষিকা গনের সাথে অশালীন আচরন, ২০১০ সাল হতে অদ্যাবদি এইচএসসি পরিক্ষা কেন্দ্রের বিভিন্ন খাতের অর্থ আত্মসাৎ, প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যায়ের হিসাব প্রদানে অসচ্ছতা সহ নানা অভিযোগের বিষয় তুলে ধরে এই অভিযোগ করা হয়েছে এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
এদিকে তিনি এমন কর্মকান্ড সম্পুর্ণ করে নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন দীর্ঘ সময় ধরে।ছাত্র জনতার আন্দোলনে তিনি তার কুকর্মের কারনে এমন রোষানলে পড়তে পাড়েন ধারনায় দীর্ঘ ২০/২৫ দিন যাবত প্রতিষ্ঠানেও অনুপস্থিত রয়েছেন বলে জানা যায় উক্ত প্রতিষ্ঠানে গেলে।বিপরীত দিকে তিনি এমন ঘটনা সংগঠিত হওয়ার আগে নিজের ছেলের বন্ধ বান্ধবীদের ভাড়া করে এনে নিজ বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রতিবাদ করেন তাকে নাকি প্রতিষ্ঠানে আসলে জোর করে পদত্যাগ করাবেন।কে এই পদত্যাগ করাবেন আর কেনই বা তা করানো হবে আর এমন ভীতিই বা কেন তার মনে তার কোন সুরহা মিলেনি এই প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাথে কথা বলেও।
এবিষয়ে কথা হলে কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমি হক বলেন, আমার কাছে উক্ত প্রতিষ্ঠানের অন্য সকল শিক্ষকেরা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অদ্য কার্যদিবস থেকে আমি প্রতিষ্ঠান প্রধানকে প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছি তবুও তিনি প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস প্রদান করেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবুল কালাম আজাদ
অফিস: হোল্ডিং নং- ৪২, মাহাতাব লেন, নিয়ামতপুর বৃত্তিপাড়া, সৈয়দপুর-৫৩১০, নীলফামারী।