খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব বাসুলী গ্রামে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাড়ির পাশের জমি রক্ষা করতে মূর্তি ভাঙ্গার গুজব ছড়িয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এরকম ঘটনায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেও কোন সত্যতা পায় নি। পরে জমির মালিকের পরিবার ও বংশধরদের বিরুদ্ধে গাছকাটা ও মারধর করার অভিযোগ তুলে আশ্রয়নে বসবাসরত দীনেশ বৈশ্য নামে এক ব্যক্তি থানায় মামলা করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঐ এলাকায় দীনেশ বৈশ্য আশ্রয়ন প্রকল্পের বাড়িতে বসবাস করে। তাকে দেওয়া সরকারের ২ শতক জমি ছাড়াও তিনি বাড়ির পার্শ্বে হাছান আলী মাস্টারের জমি দখল করে বেড়া দেয় এবং গাছপালা লাগায়। এছাড়াও বেড়ার বাইরে অরক্ষিত ভাবে বাঁশের বেড়া দিয়ে দরজা ছাড়াই একটি পূজোর ঘর বসায়। সেই দখল কৃত জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য দীনেশ বৈশ্যকে বারবার বললেও তিনি জায়গা ছেড়ে না দেওয়ায় জমির মালিক হাছান আলী ও তাঁর পরিবারের লোকজন জমিতে লাগানো গাছপালা কেটে ফেলে। এঘটনায় একই এলাকার সুধেন বৈশ্যের ছেলে মানিক বৈশ্য এলাকায় মূর্তি ভাঙ্গার গুজব ছড়িয়ে মুঠোফোনে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দেয়। যদিও প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার কোন সত্যতা পায় নি। তবে গাছপালা কাটা ও মারধরের অভিযোগ তুলে সেই রাতে ১০ জন নামীয় সহ অজ্ঞাত ৬/৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। মূর্তি ভাঙ্গার গুজব ছড়ানো এবং পরে মামলার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক পরিবেশ বিরাজমান রয়েছে। এতে যেকোন সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হতে পারে বলে জানান এলাকাবাসী।
মামলার বাদী দীনেশ বৈশ্যের স্ত্রী সুমিলা বৈশ্যের সাথে কথা হলে তিনি জানান, স্বীকার করছি আমরা বরাদ্দের চেয়ে বেশি জায়গা দখল করে আছি। কিন্তু বাড়ির পার্শ্বের সেই জায়গায় খাস মনে করে আমরা এতদিন দখলে রেখেছিলাম। আর আমাদের মূর্তি ভাঙ্গা হয় নি। এগুলো এলাকার অন্য কেউ মানুষক জানাইছে।
জমির মালিক মোঃ হাছান আলী জানান, সেখানে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাড়ি করার মত প্রতুল জায়গা ছিল না। সে সময়ের ইউএনও মহোদয়ের অনুরোধে বাড়ি গুলো করার জন্য খাস জায়গার সাথে আমার জমিও ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির বাইরে অবস্থান করায় এবং সেই জমি বন্ধকে থাকায় আশ্রয়নে বসবাসরত ব্যক্তিরা বরাদ্দের চেয়ে বেশি জায়গা দখল করে রাখেন। সে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাদের অনুরোধ সহ প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েও কোন সুরাহা পাই নি। তবে বর্তমানে এলাকায় কিছু ব্যক্তি মূর্তি ভাঙ্গার গুজব ছড়িয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এজন্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা কামনা করেন।
খানসামা থানার ওসি চিত্তরঞ্জন রায় বলেন, মূর্তি ভাঙ্গার গুজব ছড়ানো হলেও এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। আর এ ধরনের কোন লিখিত অভিযোগ পাই নি। তবে মারধর ও গাছপালা কাটা ফেলার একটি মামলা হয়েছে। এরপরও পরিবেশ যাতে ভাল থাকে সেজন্য আমাদের নজরদারি রয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবুল কালাম আজাদ
অফিস: হোল্ডিং নং- ৪২, মাহাতাব লেন, নিয়ামতপুর বৃত্তিপাড়া, সৈয়দপুর-৫৩১০, নীলফামারী।