মোঃ আশরাফুল ইসলাম রাজু: বিভিন্ন সমস্যা আর জনবল সংকটে জর্জরিত নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উপজেলার নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসাস্থল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ৫০ শয্যায় উন্নীত করে অবকাঠামো উদ্বোধন করা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় জনবল রয়েছে অনেক কম। আশানুরূপ সেবা পাচ্ছেন না গ্রাম থেকে আসা দরিদ্র রোগীরা।
এ হাসপাতালে প্রতিদিন আউটডোরে ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী আসেন। বেডে সব সময় ১০০ থেকে ১২০ রোগী ভর্তি থাকেন। এতে চরম ক্ষুব্ধ ও হতাশ রোগী এবং রোগীর স্বজনরা। অন্যদিকে খাবারের মান নিয়ে আছে বিস্তর অভিযোগ।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ৫০ শয্যায় হাসপাতালে সরকারি ভাবে প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ ৩৩জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছেন ১০ জন, ২৩টি পদ শূন্য। সিনিয়র-জুনিয়র নার্স ৩৪ জনের স্থলে আছেন ৩১ জন, ৪টি পদ শূন্য। স্বাস্থ্য সহকারী ১০৪ জনের স্থলে আছেন ৫৮ জন, ৪৬টি পদ শূন্য। আয়া ২৮ জন স্থলে আছেন ১৪ জন, ১৪টি পদ শূন্য।
সরেজমিন দেখা যায়, অনেকেই এসেছেন চিকিৎসা নিতে। উপচেপড়া ভিড় দেখে অনেকে সেবা না নিয়ে রেগে চলেও যাচ্ছেন। অনেকে অপেক্ষা করছেন সিরিয়ালের জন্য। আবার অনেকে ভর্তি হচ্ছেন।কথা হলে নুরন্নবী নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, আমার শাশুড়ীকে নিয়ে এসেছি। সেবার মান খুবই খারাপ। অনেক ঘুরে সেবা নিতে হচ্ছে। এখানকার খাবারের কথা আর নাইবা বললাম।
অহিদুল ইসলাম নামে এক রোগী বলেন, দুদিন ধরে ভর্তি ছিলাম, তাতে বুঝে গেছি হাসপাতালে স্টাফ নেই বললেই চলে।
জাহানারা বেগম নামের আরেক রোগী বলেন, সকাল থেকে এক্স-রে করার জন্য বসে আছি। সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে তারপরও ডাক্তার আসার নাম নেই। নার্সদের বললে শুধু বলে হবে, ধৈর্য ধরেন। এভাবে কি হাসপাতাল চলে?
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং সুপারভাইজার তোছাদ্দেকুল ইসলাম বলেন, এখানে অনেক রোগী আসেন। আমাদের আয়ার সমস্যা আছে। এদিকে ক্লিনারের সমস্যা। সরকারি ক্লিনার প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মোঃমেসবাহুর রহমান প্রধান মেসবাহ বলেন, আমরা আউটডোরে প্রায় ৭০০ থেকে৮০০ রোগী দেখি। সংখ্যাটা আসলেই ঈর্ষণীয়। এ রোগীগুলোকে ভালো সেবা দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত জনবল প্রয়োজন। আমাদের ডাক্তার থেকে শুরু করে ক্লিনারসহ সব জায়গায় লোকবল অনেক কম। প্রতি মাসেই লোকবল চেয়ে প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষকে পাঠাই। আশা করছি দ্রুত লোকবল নিয়োগ হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ এইচ এম রেজওয়ানুল কবির বলেন, আমাদের বহির্বিভাগে অনেক রোগী এসে সেবা নিয়ে যাচ্ছেন। সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। আমরা আশা করছি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জনবল নিয়োগ হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবুল কালাম আজাদ
অফিস: হোল্ডিং নং- ৪২, মাহাতাব লেন, নিয়ামতপুর বৃত্তিপাড়া, সৈয়দপুর-৫৩১০, নীলফামারী।