সৈয়দপুর ১১:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নীলফামারীতে স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ রেখে পালিয়ে গেলেন স্বামী

আশরাফুল ইসলাম রাজু
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৩:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮৮ বার পড়া হয়েছে
চোখ২৪.নেট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মো. আশরাফুল ইসলাম রাজু: নীলফামারীর সৈয়দপুরে স্ত্রীকে হত্যা করে মৃত্যু স্ত্রীর লাশ ঘরে তালাবদ্ধ রেখে পালিয়েছেন স্বামী।তালাবদ্ধ ঘর থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধূর বোন জানান, তার দুলাভাই মোবাইলফোনে তাকে বলেন, ‘তোর বোনকে মেরে ফেলে রেখেছি। তোরা এসে লাশ নিয়ে যা…।’

গেল মঙ্গলবার রাতে উপজেলা গোয়ালপাড়া এলাকা থেকে মৃত্যু স্ত্রীর লাশটি উদ্ধার করেন সৈয়দপুর থানা পুলিশ। গৃহবধূ শবনম আক্তার (২৮) উপজেলার হাতিখানা এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী এবং দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার আব্দুর রহমানের মেয়ে।

শবনমের ছোট বোন রুস্কি আক্তার বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার দুলাভাই তাকে মোবাইলফোনে বলেন, ‘তোর বোনকে মেরে ফেলে রেখেছি। তোরা এসে লাশ নিয়ে যা…। আমি থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করব।’ তিনি এটাকে দুলাভাইয়ের পাগলামি মনে করেছিলেন। পরে দুলাভাইয়ের দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে দেখেন ভাড়া বাসায় তালাবদ্ধ ঘরে বড় বোনের লাশ পড়ে আছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দেড় মাস আগে ফুঁচকা ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীরের সঙ্গে শবনমের প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে হয়েছিলো। তার আগের একটি সংসার ছিলো।ঐ সংসারে স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে জাহাঙ্গীরের। সোমবার দুপুরে জাহাঙ্গীর এবং শবনম গোয়ালপাড়া এলাকার আক্তারী বেগমের একটি রুম ২ হাজার টাকায় ভাড়ায় নেয়। গভীর রাতে পাশের ভাড়াটিয়া দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডার ও মারামারি শব্দ শুনতে পান। মঙ্গলবার রাতে গৃহবধূর মা ও ছোট বোন এসে ঘরের জানালা দিয়ে দেখেন খাটের ওপর লেপ দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় মরদেহ পড়ে আছে। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে তালা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ। ঘটনার পর থেকে স্বামী জাহাঙ্গীর পলাতক।

গৃহবধূর মা ফারজানা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই জাহাঙ্গীর মেয়েকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করত। সম্প্রতি যৌতুকের জন্য চাপ দিলে তিনি এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে তার হাতে দেন। জাহাঙ্গীর ওই টাকা দিয়ে ব্যবসা না করে বিভিন্ন ধরনের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। নেশা করতে বাধা দেওয়ায় তাঁর মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে তালা ভেঙে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর হত্যার কারণ জানা যাবে। স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য


নীলফামারীতে স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ রেখে পালিয়ে গেলেন স্বামী

আপডেট সময় : ০৩:৩৩:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

মো. আশরাফুল ইসলাম রাজু: নীলফামারীর সৈয়দপুরে স্ত্রীকে হত্যা করে মৃত্যু স্ত্রীর লাশ ঘরে তালাবদ্ধ রেখে পালিয়েছেন স্বামী।তালাবদ্ধ ঘর থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধূর বোন জানান, তার দুলাভাই মোবাইলফোনে তাকে বলেন, ‘তোর বোনকে মেরে ফেলে রেখেছি। তোরা এসে লাশ নিয়ে যা…।’

গেল মঙ্গলবার রাতে উপজেলা গোয়ালপাড়া এলাকা থেকে মৃত্যু স্ত্রীর লাশটি উদ্ধার করেন সৈয়দপুর থানা পুলিশ। গৃহবধূ শবনম আক্তার (২৮) উপজেলার হাতিখানা এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী এবং দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার আব্দুর রহমানের মেয়ে।

শবনমের ছোট বোন রুস্কি আক্তার বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার দুলাভাই তাকে মোবাইলফোনে বলেন, ‘তোর বোনকে মেরে ফেলে রেখেছি। তোরা এসে লাশ নিয়ে যা…। আমি থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করব।’ তিনি এটাকে দুলাভাইয়ের পাগলামি মনে করেছিলেন। পরে দুলাভাইয়ের দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে দেখেন ভাড়া বাসায় তালাবদ্ধ ঘরে বড় বোনের লাশ পড়ে আছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দেড় মাস আগে ফুঁচকা ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীরের সঙ্গে শবনমের প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে হয়েছিলো। তার আগের একটি সংসার ছিলো।ঐ সংসারে স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে জাহাঙ্গীরের। সোমবার দুপুরে জাহাঙ্গীর এবং শবনম গোয়ালপাড়া এলাকার আক্তারী বেগমের একটি রুম ২ হাজার টাকায় ভাড়ায় নেয়। গভীর রাতে পাশের ভাড়াটিয়া দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডার ও মারামারি শব্দ শুনতে পান। মঙ্গলবার রাতে গৃহবধূর মা ও ছোট বোন এসে ঘরের জানালা দিয়ে দেখেন খাটের ওপর লেপ দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় মরদেহ পড়ে আছে। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে তালা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ। ঘটনার পর থেকে স্বামী জাহাঙ্গীর পলাতক।

গৃহবধূর মা ফারজানা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই জাহাঙ্গীর মেয়েকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করত। সম্প্রতি যৌতুকের জন্য চাপ দিলে তিনি এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে তার হাতে দেন। জাহাঙ্গীর ওই টাকা দিয়ে ব্যবসা না করে বিভিন্ন ধরনের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। নেশা করতে বাধা দেওয়ায় তাঁর মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে তালা ভেঙে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর হত্যার কারণ জানা যাবে। স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।