আগামীকাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন মোঃ সাহাবুদ্দিন

- আপডেট সময় : ০৯:০৫:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৩ ৪১ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্টঃ আগামীকাল (সোমবার) দেশের ২২তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন মোঃ সাহাবুদ্দিন। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বঙ্গভবনের ঐতিহাসিক দরবার হলে বেলা ১১টার দিকে তাকে শপথ পাঠ করাবেন।
রাষ্ট্রপতির শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যসহ কয়েকশ বিশিষ্ট অতিথি। অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন। এরপর শপথ নথিতে সই করবেন নতুন প্রেসিডেন্ট মোঃ সাহাবুদ্দিন।
রাষ্ট্রপতির সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে জানান, শপথ গ্রহণের পরপরই নতুন প্রেসিডেন্ট মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ার বদল করবেন।
সদ্য বিদায়ী ২১তম প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদের স্থলাভিষিক্ত হবেন মুক্তিযোদ্ধা ও মাঠ পর্যায়ের রাজনীতিবিদ মোঃ সাহাবুদ্দিন। সাবেক প্রেসিডেন্ট মোঃ জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ৪১ দিনসহ টানা দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১০ বছর ৪১ দিন অতিবাহিত করার পরে অবসরে যাচ্ছেন আবদুল হামিদ।
নতুন প্রেসিডেন্টের স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ও ছেলে আরশাদ আদনান রনিসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়াও প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, সংসদ সদস্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনীতিক, সম্পাদকসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশের ২২তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ৭৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ। পাবনা শহরের শিবরামপুরের জুবিলী ট্যাংক পাড়ায় ১৯৪৯ সালের ১০ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন মোঃ সাহাবুদ্দিন। তার ডাক নাম চুপ্পু। তার পিতার নাম শরফুদ্দিন আনছারী, মাতা খায়রুন্নেসা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে এমএসসি এবং পরে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন ও বিসিএস (বিচার) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি।
তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পাবনা জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। জেলা বাকশালের যুগ্ম-সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
ছেষট্টির ৬ দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন মোঃ সাহাবুদ্দিন।
তিনি পাবনা জেলার আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন। ওই সময় সামরিক শাসকদের রোষানলে তিন বছর জেল খাটেন ও অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন।
মোঃ সাহাবুদ্দিন দৈনিক বাংলার বাণীতে সাংবাদিকতাও করেছেন। তার অনেক কলাম বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়েছে। কর্মজীবনে তিনি জেলা ও দায়রা জজ এবং দুদক কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।
মোঃ সাহাবুদ্দিন পরপর দুবার বিসিএস (বিচার) অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত হন। চাকরি থেকে অবসরের পর হাইকোর্টে আইন পেশায় নিযুক্ত হন। পরবর্তী সময়ে ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দুদক কমিশনার হিসেবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিরুদ্ধে ওঠা তথাকথিত দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দৃঢ়তার পরিচয় দেন মো. সাহাবুদ্দিন।
সাবেক এই ছাত্রনেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।