সৈয়দপুর ০৮:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খানসামায় আলুর দরপতনে লোকসানে চাষীরা, প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকা দরে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:১০:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ২৮ বার পড়া হয়েছে

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার হোসেনপুর সেনপাড়ার আলু চাষী লক্ষণ রায়ের জমি থেকে তোলা ছবি।

চোখ২৪.নেট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মো: নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় গত বছরের মতো এবারও আলু চাষ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। ফলন কম আর কাক্সিক্ষত দাম না পেয়ে আগাম জাতের আলুতে উৎপাদন খরচ তুলতে পারছেন না চাষিরা। অপরদিকে উপজেলায় কোনো হিমাগার না থাকায় বাধ্য হয়ে ক্ষেত থেকে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষকদের।

উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয় এবং প্রায় ৫৩ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়। হেক্টর প্রতি আলুর গড় উৎপাদন ১৬.৫ মেট্রিক টন।

বুধবার সকালে সরেজমিনে উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের হোসেনপুর সেনপাড়া গ্রামের আলু চাষী লক্ষণ রায় শ্রমিকদের নিয়ে গ্রানুলা জাতের আলু তুলেছিলেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ৯ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছেন তিনি। এক বিঘা জমিতে তার ৬০ কেজি ওজনের ৪০ বস্তা আলু হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী এই আলুর দাম ২১ হাজার ৬০০ টাকা। অথচ ৪০ বস্তা আলু উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৯ হাজার টাকা। প্রতি কেজিতে আলু উৎপাদন করতে খরচ প্রায় ১২ টাকা।

একই এলাকার আরেক আলু চাষী আজিজুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ৩ বিঘা জমিতে সেভেন ও গ্রানুলা জাতের আলু আবাদ করেছেন। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী প্রতি বিঘায় কমপক্ষে ১২ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে তাকে।

আরো কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় গ্রানুলা, স্টিক ও সেভেন জাতের আলু আবাদ হয়েছে। এ তিন ধরনের আলুতে বীজের মূল্য এবং পরিচর্যা অনুযায়ী উৎপাদন খরচের বেশ তারতম্য রয়েছে। গ্রানুলা আলুতে প্রতি বিঘায় চাষাবাদে ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা, স্টিক ও সেভেন জাতের আলুতে ৩৫ থেকে ৩৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বলেন, খানসামা উপজেলায় তুলনামূলক আলুর চাষাবাদ বেশি হয়। তবে এই উপজেলায় হিমাগার না থাকায় কৃষকরা ভরা মৌসুমে কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। কৃষকদের এ সমস্যা আমরা চিহ্নিত করেছি। সমস্যাটি থেকে উত্তরণের জন্য আলু সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য


খানসামায় আলুর দরপতনে লোকসানে চাষীরা, প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকা দরে

আপডেট সময় : ০৪:১০:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

মো: নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় গত বছরের মতো এবারও আলু চাষ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। ফলন কম আর কাক্সিক্ষত দাম না পেয়ে আগাম জাতের আলুতে উৎপাদন খরচ তুলতে পারছেন না চাষিরা। অপরদিকে উপজেলায় কোনো হিমাগার না থাকায় বাধ্য হয়ে ক্ষেত থেকে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষকদের।

উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয় এবং প্রায় ৫৩ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়। হেক্টর প্রতি আলুর গড় উৎপাদন ১৬.৫ মেট্রিক টন।

বুধবার সকালে সরেজমিনে উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের হোসেনপুর সেনপাড়া গ্রামের আলু চাষী লক্ষণ রায় শ্রমিকদের নিয়ে গ্রানুলা জাতের আলু তুলেছিলেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ৯ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছেন তিনি। এক বিঘা জমিতে তার ৬০ কেজি ওজনের ৪০ বস্তা আলু হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী এই আলুর দাম ২১ হাজার ৬০০ টাকা। অথচ ৪০ বস্তা আলু উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৯ হাজার টাকা। প্রতি কেজিতে আলু উৎপাদন করতে খরচ প্রায় ১২ টাকা।

একই এলাকার আরেক আলু চাষী আজিজুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ৩ বিঘা জমিতে সেভেন ও গ্রানুলা জাতের আলু আবাদ করেছেন। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী প্রতি বিঘায় কমপক্ষে ১২ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে তাকে।

আরো কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় গ্রানুলা, স্টিক ও সেভেন জাতের আলু আবাদ হয়েছে। এ তিন ধরনের আলুতে বীজের মূল্য এবং পরিচর্যা অনুযায়ী উৎপাদন খরচের বেশ তারতম্য রয়েছে। গ্রানুলা আলুতে প্রতি বিঘায় চাষাবাদে ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা, স্টিক ও সেভেন জাতের আলুতে ৩৫ থেকে ৩৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বলেন, খানসামা উপজেলায় তুলনামূলক আলুর চাষাবাদ বেশি হয়। তবে এই উপজেলায় হিমাগার না থাকায় কৃষকরা ভরা মৌসুমে কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। কৃষকদের এ সমস্যা আমরা চিহ্নিত করেছি। সমস্যাটি থেকে উত্তরণের জন্য আলু সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।