খানসামায় ২৯টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিল স্থগিত, তৃণমূল নেতাকর্মীদের ক্ষোভ

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময় : ১০:১৬:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ৫২ বার পড়া হয়েছে

খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের খামার বিষ্ণুগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন।

মোঃ নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ৫৪ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৯ টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিল স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে দুই দফায় ২৫ টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০১২ সালে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দীর্ঘ ১০ বছর পর এ বছরের আগামী ১১ অক্টোবর উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে সামনে রেখে উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা শেষে গত ২০ সেপ্টেম্বর হতে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ৫৪ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৪ টি ওয়ার্ডে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ২০২০ সালে ১১ টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন হয়েছিল। আর বাকি ২৯ টি ওয়ার্ডে সদস্য সংগ্রহ না করা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব, প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, ভোটার তালিকা তৈরি না করা, ভোটার তালিকা তৈরিতে অসঙ্গতি সহ বিভিন্ন অভিযোগে সংঘর্ষ, মারামারি ও বাকবিতন্ডায় কাউন্সিল স্থগিত করা করেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের কাউন্সিল পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ। এর মধ্যে আলোকঝাড়ি ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ড, ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের ২, ৪, ৫, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড, আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ১, ৪, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড, খামারপাড়া ইউনিয়নের ১, ৩, ৪, ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ড, ভাবকি ইউনিয়নের ৬ ও ৯ নং ওয়ার্ড এবং গোয়ালডিহি ইউনিয়নের ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিল স্থগিত করা হয়। তবে এর মধ্যে খামারপাড়া ইউনিয়নের ৩ ও ৮ নং ওয়ার্ডে শুধু সভাপতি পদে কাউন্সিল হয়।
একাধিক পদ প্রত্যাশীরা জানান, ১০ বছর পর কাউন্সিল হচ্ছে। কাউন্সিলে ছোট-খাট অভিযোগ থাকতেই পারে। সেগুলো সেখানে বসেই নিষ্পত্তি করা যায়। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এসে তাদের পছন্দের লোক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত না হওয়ার আশাঙ্কায় তারা কাউন্সিল স্থগিত করে চলে যায়। এতে তৃণমূলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।
আঙ্গারপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ধীমান দাস বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনায় কাউন্সিল করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু কাউন্সিল করতে ওয়ার্ডে গিয়ে কার্যক্রম শুরুর আগেই সদস্য সংগ্রহ না করা ও ভোটার তালিকায় ত্রুটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের পরামর্শে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঘোষিত ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিল স্থগিত করা হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিল পরিচালনা কমিটির নেতা জাকারিয়া চৌধুরী জানান, বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওয়ার্ডে কাউন্সিল স্থগিত করা হয়েছে। তবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাথে পরামর্শ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থগিতাদেশ ওয়ার্ড গুলোতে কাউন্সিল করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান সফিউল আযম চৌধুরী লায়ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে বক্তব্যকালে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিল করতে গিয়ে বিভিন্ন অভিযোগে কোথাও কোথাও বাকবিতন্ড ও উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা কাউন্সিল স্থগিত করেছে। তবে এগুলো আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা নিজেরাই বসে সেগুলো সমাধান করব।