নীলফামারীর কুমলাই নদী উদ্ধারে ১০দফা দাবীতে সংবাদ সসম্মেলন

- আপডেট সময় : ১২:২১:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪ ৬২ বার পড়া হয়েছে

ফজল কাদিরঃ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত কুমলাই নদী থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, নদীর জমি নদীর নামে অন্তর্ভুক্ত করা ও এর প্রবাহ সচল করার জন্য ১০ দফা দাবীতে এক সংবাদ সম্মলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বহস্পতিবার সকালে নীলফামারী প্রেসক্লাব হলরুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, রিভারাইন পিপল’র পরিচালক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডঃ তুহিন ওয়াদুদ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ২০২৩ সালে বাংলাদশর নদ-নদীঃ সংজ্ঞা ও সংখ্যা শীর্ষক একটি বই প্রকাশ করেছে। এই বইয়ে নীলফামারীতে ২৭টি নদীর কথা বলেছে। আমরা সরেজমিনে এ জেলায় ৩৪টি নদীর সন্ধান পেয়েছি। রংপুর বিভাগে যে নদীগুলো আছে তার মধ্য সবচেয়ে সংকটে থাকা নদীগুলার একটি কুমলাই নদী। নদীটির উপর ভয়াবহ নির্যাতন করা হয়েছে। কেবল তাই নয় নদীটিকে খুন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন নদীটির চরম সর্বনাশ করা হয়েছে। ২০১৯ সালে দেশের উচ আদালত নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করে রায় দিয়েছে। জীবন্ত সত্তা কুমলাই নদী হত্যা করাকে ফৌজদারী অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। নদ-নদী নিয়ে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন এবং পানি উনয়ন বোর্ড যে তথ্য দিয়েছে তা সঠিক নয়। বাস্তবে কুমলাই নদী তিস্তার আন্ত: শাখা নদী। নদীটি ডিমলা উপজলার ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড় সিংহরচর থেকে তিস্তা থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রায় ২০ কিলামিটার প্রবাহিত হয়ে খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা এবং টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব খড়িবাড়ী নামক মৌজায় তিস্তা নদীতে আবার মিলিত হয়েছে। বর্তমান নদী খকাদর কারণ নদীটি মরণাপন। নদীটির স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রোগ নির্ণয় কেন্দ্র, সরকারি মহিলা মার্কেট, সেতু বিহীন একাধিক পাকা-কাঁচা সড়ক, অনেক বাড়ি, অনেক গুলা দোকান, পুকুর এবং আবাদি জমি বানিয়েছে।
সংবাদ সম্মলন তিনি আরো বলেন, যাদের এই নদী দেখভাল করার কথা ছিল তাদের যৌথ প্রভেষ্টায় নদীটির চরম ক্ষতি সাধন করা হয়েছে। প্রথমত পানি উনয়ন বোর্ড ক্ষতি করেছে। দ্বিতীয়ত স্থানীয় প্রশাসন নদীর জমি ব্যাক্তির নামে লিখে দিয়ে খাজনা নিয়েছে এবং খারিজ দিয়েছে। মজার বিষয় হলো, কুমলাই নদী সিএস এবং এসএ রকর্ডে নদী হিসেবে থাকলেও বর্তমান আরএস রেকর্ডে এই জমি ব্যক্তি মালিকানা। তাই নদীটি উদ্ধারের জন্য ১০ দফা দাবী হচ্ছে, ১ নং নদী থেকে তালিকাভুক্ত ২৭০ জন এবং তালিকার বাইরে সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হোক। ২ নং সিএস রেকর্ড এবং বর্তমান প্রবাহ বিবচনায় নিয়ে নদীর সীমানা চিহ্নিত করা হোক। ৩নং নদীর জমি ব্যাক্তি মালিকানা বাতিল করে রেকর্ড সংশোধন করা হোক। ৪ নং নদীটির উৎস-মিলন দৈর্ঘ্য প্রস্থ লিপিবদ্ধ করা হোক। ৫ নং বিভিন প্রতিষ্ঠানের ভ্রান্তি দুরীকরণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। ৬ নং নদীটির পুরনো প্রবাহপথ সচল করা হোক। ৭ নং সেতু বিহীন আড়াআড়ি সড়ক নদীর প্রকৃত প্রস্থ অনুযায়ী সেতু নির্মাণ করা হোক। ৮ নং নদীর প্রকৃত প্রস্থ অনুযায়ী সেতু নির্মাণ করা হোক। ৯ নং নদীর উপর থেকে বিদ্যালয় সরকারী উদ্যাগে সরিয়ে নেয়া হোক এবং ১০নং দফা হচ্ছে, নদী অবৈধ দখল, খাজনা-খারিজ, ক্রয়-বিক্রয়, রেকর্ডভুক্ত করার কাজে যারা জড়িত তাদর বিরদ্ধ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
রিভারাইন পিপল’র নীলফামারী জলা সম্বনয়ক আব্দুল ওয়াদুদর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম, কুমলাই নদী সুরক্ষা কমিটির সদস্য সচিব মমিনুর রহমান কাজল, শালকি নদী সুরক্ষা কমিটির আহবায়ক আমিনুর রহমান, সদস্য সচিব জুলফিকার আলী ভুট্টো, চকোডারা নদী সুরক্ষা কমিটির আহবায়ক শাহজাহান আলী, নীলফামারী প্রেসক্লাবের সভাপতি মনজুরল আলম সিয়াম, সাধারণ সম্পাদক নুর আলম প্রমূখ।