প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনুপম নীলাভূমি নীলফামারীর নীলসাগর

- আপডেট সময় : ১১:৫০:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ৫৯ বার পড়া হয়েছে

ফজল কাদির: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনুপম নীলাভূমি নীলসাগর। অনেকের অজানা রয়েছে এই নীলসাগর সম্পর্কে। সূর্য প্রেমিকরা এর নৈসর্গিক রুপ দেখে অভিভুত হয়। এখানে গড় উঠছ মনোরম পর্যটন কেন্দ্র। দেশ বিদেশের লোকের সমাগম ঘটছে এখন নিত্যদিন। সমুদ্র নয়, তব সমুদ্রের সঙ্গে মিল রেখে ১৯৮০ সালে নামকরণ করা হয় নীলসাগর। আগে এটি ছিল বিনাদিঘি। এর আয়তন ৯৩ দশমিক ৯০ একর। নীলফামারী জেলা শহর থেকে উত্তর-পশ্চিম ১৪ কিলামিটার দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নে এর অবস্থান। নীলসাগর ঘিরে আছে বৃক্ষরাজি, তরুলতা, বণ ও গুল্মলতা। শীতর শুরুতে এখানে আসতে থাকে অতিথি পাখি। পাখির কলতানে মুখর হয়ে ওঠে এলাকাটি।
এই দিঘি নিয়ে জনশ্রুতি আছে, প্রায় দুই’শ বছর আগে বিরাট রাজার গরুকে পানি খাওয়ানার জন্য দিঘিটি খনন করা হয়। বিরাট রাজা যুদ্ধে মারা গেলে তাঁকে এর পাড়েই সমাহিত করা হয়। আবার অনকের ধারণা, ওই রাজার একমাত্র মেয়ে বিন্যাবতীর স্লানের জন্য দিঘিটি খনন করা হয়েছিল। তাঁর নামানুসার এর নামকরণ হয় ‘বিনাদিঘি’। ১৯৯৮ সাল নীলসাগরকে পাখিদের অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। নীলসাগরের আশেপাশের পরিবেশ ভ্রমণপিপাসুদের চিত্তবিনোদনের উপযাগী করতে বিভিন্ন ধরনের সংস্কার কাজ করা হয়েছে।
পূর্ব দিকে একটি মন্দির এবং পশ্চিম পাশে এক দরবেশের মাজার অবস্থিত। অনেক আগে এখানে দরবেশের আস্তানা ছিল। প্রতিদিন সন্ধ্যায় এখানে জমে উঠছিল দেহতত্বের গান। চৈত্র মাসের পূর্ণিমায় বারুনী সান উপলক্ষে নীলসাগর তটে মেলা বসে। দূর-দুরান্ত থেকে অসংখ্য দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে এখানে। নীলসাগরের দৈর্ঘ্য প্রস্থ এক মাইল। এ দীঘির পানি খুবই স্বছ ও নির্মল। তাছাড়া দীঘিতে কান জলজ উদ্ভিদ বা আবর্জনা নেই।
১৯৫৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান মৎস্য বিভাগ এ দীঘিতে মাছ শিকারের জন্য বড় বড় সামদ্রিক জাল ফেলত। পানির নীচে জাল আটকে গেলে ডুবুরী নামিয়ে দেখা যায়, পুকুরের মাঝখানে পাকা প্রাচীর সহ ছোট একটি মন্দির।
নীলসাগরের চারিদিকে সবুজ ঘন বৃক্ষরাজি মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে। মসজিদ, মন্দির ও ডাকবাংলা আছে দীঘির পাড়ে। নীলসাগরে সারা বছরেই অতিথি পাখি সহ নানা প্রজাতির পাখি বসবাস করে। তবে শীতে অতিথি পাখির আগমনে দর্শনীয় হয়ে উঠ। তখন আরা মোহনীয় হয়ে ওঠে এ স্থানটি। দূর থেকে মন হয় নীল নীল স্বপ্নের মতো নীলসাগর।