ডোমারে রুপসা ট্রেনের সাথে মিতালী ইঞ্জিনের মুখোমুখি সংঘর্ষঃ আহত ১০ জন

- আপডেট সময় : ১১:৫৫:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৩ ৫০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি : নীলফামারীর ডোমারে চিলাহাটী ষ্টেশন থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী রুপসা ট্রেনের সাথে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মিতালী ও রুপসা ট্রেনের চালকসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। আহত দু’চালককে ডোমার উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলেও বাকী আহত যাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
বুধবার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে চিলাহাটী রেল স্টেশনের আউটারের কাছে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় চিলাহাটির সাথে রেল যোগাযোগ। ট্রেন সংঘর্ষের ঘটনায় চিলাহাটি ষ্টেশন মাষ্টার টুটুল চন্দ্র সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে চিলাহাটী রেল স্টেশন থেকে খুলনাগামী রুপসা ট্রেনটি(৬৫২৬) আধা কিলোমিটার যাওয়ার পর ১ নং হোম সিগন্যালে লাইন্স ক্লিয়ারের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা মিতালী এক্সপ্রেসের লোকোমেটিভে(৬৫২১) ইঞ্জিনের সাথে সংঘর্ষ ঘটে। সংর্ঘষের পর রুপসা ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলেও মিতালি ট্রেনের ইঞ্জিনটি তখনও চালু ছিল।
এসময় যাত্রীরা ভয়ে ট্রেন থেকে নেমে ছুটোছুটি করতে থাকে। সংঘর্ষে ২টি ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং দাঁড়িয়ে থাকা ইঞ্জিনটি প্রায় ৫০০ গজ দূরে ছিটকে যায় । রুপসার ১১ টি বগির মধ্যে ৫ টি বগি ট্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে মিতালীর পাওয়ার ইঞ্জিনের ড্রাইভার তহিদুল আলম ও রুপসা এক্সপ্রেসের চালক মাজেদ মিয়া গুরুতর আহত হয়। তাদেরকে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা শেষে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে চিলাহাটি ও ডোমার ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েছে।
রুপসা ট্রেনের গার্ড আল আমিন বলেন, চিলাহাটি ষ্টেশন হতে ক্লিয়ারেন্স পেয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রুপসা ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়। ঘন কুয়াশার কারণে ষ্টেশন থেকে ১ নং আপ পয়েন্ট হোম সিগন্যাল এলাকায় মিতালির লোকো ইঞ্জিনের সাথে রুপসা এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ডোমার রেলস্টেশন মাস্টার মোসাদ্দেক আলী জানান, সকাল ৮.১৪ মিনিট মিতালী ট্রেনের লাইট ইঞ্জিনটি ডোমার রেলস্টেশন ছেড়ে চিলাহাটির উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
এরপর সকাল ৮টা ৩৬ মিনিটে চিলাহাটি ষ্টেশন মাষ্টার টুটুল চন্দ্র সরকার আমার কাছে ইউনিকোড চাইলে ৮টা ৩৯ মিনিটে রুপসা ট্রেনের জন্য আমি লাইন ক্লিায়ারেন্সের গোপন নম্বর দেই।
আমি মনে করেছিলাম মিতালী ট্রেনের ইঞ্জিনটি চিলাহাটি ষ্টেশনে পৌছেছে বলেই তারা আমার কাছে লাইন ক্লিয়ারেন্স চেয়েছে।
চিলাহাটি ষ্টেশন মাষ্টার টুটুল চন্দ্র সরকারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ষ্টেশনে না থাকায় ও ফোন রিসিভ না করায় তার কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
চিলাহাটি ষ্টেশনের সহকারী ষ্টেশন মোষ্টার নাজনীন আক্তার বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনার পর থেকেই দায়িত্বরত ষ্টেশন মাষ্টার টুটুল চন্দ্রকে পাওয়া যাচ্ছেনা।
চিলাহাটি ফায়ার সার্ভিসের সাব ষ্টেশন অফিসার আতাউর রহমান ট্রেন দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা যাওয়ার আগেই
ট্রেনের যাত্রীরা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করায়।
এদিকে দুঘর্টনার পর মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ১ টা ৪৫ মিনিটে
চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশনে পৌছে ২ টা ২৫ মিনিটে অন্য একটি ইঞ্জিন দ্বারা ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। পরবর্তিতে ৭ ঘন্টা বিলম্বে ৩ টা ৩০ মিনিটে রুপসা এক্সপ্রেস চিলাহাটি থেকে ছেড়ে যায়।