শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অপসারণ ও লাঞ্চিত করায় কিশারগঞ্জে প্রতিবাদ, মানববন্ধন ও বিক্ষাভ

- আপডেট সময় : ০২:১৯:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪ ১০৯ বার পড়া হয়েছে

ফজল কাদিরঃ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অপসারণের চেষ্ঠা ও সহকারী শিক্ষকদের লাঞ্চিত করার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে উপজেলার ৭৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী।
সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৈষম্যবিরাধী ছাত্র আদালনের ব্যানারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষাভ, শিক্ষকদের অবরুদ্ধ ও অফিস কক্ষে তালা ঝুলে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া শিক্ষকদের আটক রাখার মতো ঘটনাও করেছে বলে শিক্ষকরা জানান। শিক্ষকদের অপদস্ত ও জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয় ছাত্রদের ব্যানারে কিছু অসাধুচক্র। এসব ঘটনার প্রতিবাদে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকেরা মঙ্গলবার দুপুরে কিশারগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে প্রায় ১ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী মানববন্ধন করে।
এ সময় উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ বহুমূখি মডল উচ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. গালাম আজম বলেন- গত কয়েক দিন ধরে কিশোরগঞ্জে বৈষম্যবিরাধী ছাত্র আদালনের ব্যানারে কুচক্রি মহল বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে নানা অভিযাগ তুলে জোড়র্পূবক পদত্যাগের চেষ্ঠা করে। এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানগুলাতে মানববন্ধন ও বিক্ষাভ মিছিল করে। মানববন্ধন ও বিক্ষোভে ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণে অনিহা প্রকাশ করলে জোরপূর্বক ক্লাস থেকে বের করে এনেও ছাত্র-ছাত্রীদের ওই সব মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করায়। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
রনচন্ডী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মুকুল হোসেন বলেন- মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকদের সম্মান নিয়ে একটি মহল বৈষম্যবিরাধী ছাত্র আদালনের ব্যানারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খখলার অপচষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। যে সকল লোক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিতে নাম রাখতে পারেনি ও অবৈধ সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে তারাই প্রতিষ্ঠানগুলাতে বিশৃঙ্খখলা করছে। আমাদের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোন অভিযাগ থাকলে তা লিখিত আকারে প্রশাসনকে দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি আরও বলেন-তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হোক, শিক্ষকদের সম্মান নিয়ে খেলা বন্ধ করার দাবী জানান।
স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে শিক্ষকরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ করে। এসময় শিক্ষকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উত্তর দুরাকুটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম দেলোয়ার হোসেন, কালিকাপুর স্কুল এন্ড কলজের অধ্যক্ষ রেদওয়ানুর রহমান, মুশরুত পানিয়ালপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আসাদুল ইসলাম প্রমুখ।
এসময় বৈষম্যবিরাধী ছাত্র আদালনের সমন্বয়ক প্রিন্স বলন- শিক্ষকদের অপদস্ত ও সম্মানহানি যাতে করা না হয়। এজন্য আগামীকাল হতে বৈষম্যবিরাধী ছাত্র আদালনের পক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে আলোচনা করা হবে। সমন্বয়ক রফিক শাহ্ বলেন- বৈষম্যবিরাধী ছাত্র আদালনের নাম ভাঙ্গিয়ে কুচক্রিরা এসব কর্মকান্ড করছছে। দরকার হলে শিক্ষকদের সম্মান রক্ষায় আবারও আমরা বুক পেতে দিব।
উপজলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী হক বিক্ষাভ স্থলে এসে শিক্ষকদের উদ্দ্যেশ্যে বক্তব্য রাখেনন। তিনি বলেন- যে সকল বিদ্যালয়ের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধ তদন্ত সাপক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে লিখিত আকারে দেয়ার আহবান জানান। কোনভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা ও শিক্ষকদের অপদস্থ যাতে না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বায়া দেন।
উপজলা নির্বাহী অফিসারের আশ্বাসে শিক্ষকরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাপ্ত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হাতে স্মারকলিপি প্রদান করে।
কিশারগঞ্জ উপজলার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।