সৈয়দপুর ০১:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধর্মীয় সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত লালমনিরহাট পুরান বাজার জামে মসজিদ ও কালীবাড়ি মন্দির

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ অক্টোবর ২০২২ ৪৭ বার পড়া হয়েছে
চোখ২৪.নেট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: পাশাপাশি মসজিদ ও মন্দির। আবার ভিন্ন দুই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের একই আঙ্গিনা। এক পাশে ধূপকাঠি, অন্য পাশে আতরের সুঘ্রাণ। এক পাশে উলুধ্বনি, অন্য পাশে জিকির। ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত লালমনিরহাট শহরের পুরান বাজার জামে মসজিদ ও কালীবাড়ি কেন্দ্রীয় মন্দির।

১৮৩৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৮৬ বছর ধরে চলছে এই দুটি ধর্মীয় উপাসনালয়। যে যার মতো ধর্ম পালন করে চলেছেন এখানে। এখন চলছে শারদীয় দুর্গোৎসব। হাজার হাজার মানুষ এই উৎসবে শামিল হয়ে সম্প্রীতির বন্ধন উপভোগ করছেন।

এলাকাবাসীরা জানান, ১৮৩৬ সালে লালমনিরহাট শহরে পুরান বাজার এলাকায় কালীমন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। একই সময় বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমান ব্যবসায়ীরা নামাজ আদায়ের জন্য তার পাশেই একটি ছোট ঘর তোলেন। সেটির নামকরণ করা হয় পুরান বাজার জামে মসজিদ।

একই আঙ্গিনায় দুই ধর্মের মানুষ ইবাদত উপাসনা করলেও কখনই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।

জানা যায়, প্রতিবারই পূজা শুরুর আগে মসজিদ ও মন্দির কমিটি বসে করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। আজানের সময় থেকে নামাজের জামায়াত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের মাইক-ঢাকঢোল বন্ধ থাকে। নামাজের জামাত শেষ হলে মন্দিরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা হয় না।

ওই জামে মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির এক জ্বলন্ত উদাহরণ এই মসজিদ মন্দির। পুরান বাজার একসঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠান। আমরা তাদের সব কাজে সহযোগিতা করি। তারাও আমাদের সহযোগিতা করেন। নামাজের সময় মন্দিরের ঢাকঢোল বন্ধ রাখা হয়। এটি আমাদের জন্য অনেক গর্বের বিষয়। এর আগে মন্দির ও মসজিদ পরিদর্শন করে গেছেন কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও।

কালীবাড়ি কেন্দ্রীয় মন্দিরের সভাপতি ও প্রধান পুরোহিত শংকর চক্রবর্তী জানান, ১৮৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এলাকার নামকরণও করা হয় কালীবাড়ি। সামান্য বিশৃঙ্খলাও হয় না এখানে। জন্মের পর থেকে এভাবে চলতে দেখছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, এখানকার বাসিন্দারা সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থানে বিশ্বাস করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য


ধর্মীয় সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত লালমনিরহাট পুরান বাজার জামে মসজিদ ও কালীবাড়ি মন্দির

আপডেট সময় : ০৯:০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ অক্টোবর ২০২২

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: পাশাপাশি মসজিদ ও মন্দির। আবার ভিন্ন দুই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের একই আঙ্গিনা। এক পাশে ধূপকাঠি, অন্য পাশে আতরের সুঘ্রাণ। এক পাশে উলুধ্বনি, অন্য পাশে জিকির। ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত লালমনিরহাট শহরের পুরান বাজার জামে মসজিদ ও কালীবাড়ি কেন্দ্রীয় মন্দির।

১৮৩৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৮৬ বছর ধরে চলছে এই দুটি ধর্মীয় উপাসনালয়। যে যার মতো ধর্ম পালন করে চলেছেন এখানে। এখন চলছে শারদীয় দুর্গোৎসব। হাজার হাজার মানুষ এই উৎসবে শামিল হয়ে সম্প্রীতির বন্ধন উপভোগ করছেন।

এলাকাবাসীরা জানান, ১৮৩৬ সালে লালমনিরহাট শহরে পুরান বাজার এলাকায় কালীমন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। একই সময় বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমান ব্যবসায়ীরা নামাজ আদায়ের জন্য তার পাশেই একটি ছোট ঘর তোলেন। সেটির নামকরণ করা হয় পুরান বাজার জামে মসজিদ।

একই আঙ্গিনায় দুই ধর্মের মানুষ ইবাদত উপাসনা করলেও কখনই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।

জানা যায়, প্রতিবারই পূজা শুরুর আগে মসজিদ ও মন্দির কমিটি বসে করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। আজানের সময় থেকে নামাজের জামায়াত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের মাইক-ঢাকঢোল বন্ধ থাকে। নামাজের জামাত শেষ হলে মন্দিরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা হয় না।

ওই জামে মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির এক জ্বলন্ত উদাহরণ এই মসজিদ মন্দির। পুরান বাজার একসঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠান। আমরা তাদের সব কাজে সহযোগিতা করি। তারাও আমাদের সহযোগিতা করেন। নামাজের সময় মন্দিরের ঢাকঢোল বন্ধ রাখা হয়। এটি আমাদের জন্য অনেক গর্বের বিষয়। এর আগে মন্দির ও মসজিদ পরিদর্শন করে গেছেন কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও।

কালীবাড়ি কেন্দ্রীয় মন্দিরের সভাপতি ও প্রধান পুরোহিত শংকর চক্রবর্তী জানান, ১৮৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এলাকার নামকরণও করা হয় কালীবাড়ি। সামান্য বিশৃঙ্খলাও হয় না এখানে। জন্মের পর থেকে এভাবে চলতে দেখছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, এখানকার বাসিন্দারা সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থানে বিশ্বাস করেন।